প্রকৌশলী সুভাষচন্দ্র শীলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, 12:46 PM
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, 12:46 PM
প্রকৌশলী সুভাষচন্দ্র শীলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন ডিভিশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুভাষচন্দ্র শীল-এর বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়ম, দুর্নীতি, ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। নারায়ণগঞ্জের সাইমন রাজু নামে এক ব্যক্তি প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সড়ক ভবন), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে এই অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগের মূল বিষয়বস্তু
অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, সুভাষচন্দ্র শীল ২০০৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগে ড্রাফটসম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এই সময়ে তার বিরুদ্ধে নিম্নলিখিত গুরুতর অনিয়মগুলোর অভিযোগ আনা হয়েছে:
ভূমি শ্রেণী পরিবর্তন করে রাজস্ব আত্মসাৎ: বিভিন্ন সিএনজি, পেট্রোল পাম্প ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পথের ইজারা সংক্রান্ত কাজে তিনি ভিটি শ্রেণিভুক্ত ভূমিকে 'নাল' বা 'ডোবা' দেখিয়ে কম রাজস্ব আদায় করতেন এবং এর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এই অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তার একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরকারি ভূমি বেহাত: অর্থের বিনিময়ে তিনি সরকারি অধিগ্রহণকৃত ভূমির কাগজপত্র ও নকশা সিন্ডিকেট সদস্যদের হাতে তুলে দিতেন, যার ফলে অনেক সরকারি ভূমি বেহাত হয়ে গেছে।
অবৈধ সম্পদ অর্জন: অভিযোগ অনুযায়ী, অবৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী ও চট্টগ্রামে তার একাধিক বহুতল ভবন ও নামে-বেনামে কয়েক বিঘা জমি রয়েছে।
পদোন্নতির পর দুর্নীতির অভিযোগ: সম্প্রতি চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে ল্যান্ড রেকর্ড অ্যান্ড অ্যাকুইজিশন ডিভিশনে পদোন্নতি পেয়ে আসার পর, ঢাকা ডিভিশনের অধীনে ক্যান্টনমেন্ট থানা জোয়ার সাহারা মৌজায় (DESWSP) প্রকল্পের রাস্তা কাটিং ফাইল আটকে রেখে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন, যা সড়ক ভবনের সকলের নজরে এসেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সরকারি মোটরসাইকেলের অপব্যবহার: ঢাকা মেট্রো হ- ৩৮-৩২৭৬ নম্বরের সরকারি বরাদ্দকৃত মোটরসাইকেল ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগও তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে।
দ্বৈত নাগরিকত্ব ও অর্থ পাচার: সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হলো, সুভাষচন্দ্র শীলের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে এবং তিনি উপার্জিত অর্থের অধিকাংশই ভারতে পাচার করেন।
সরকারি বিধি লঙ্ঘন: সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে তিনি প্রায়শই বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং বিভিন্ন ভবনের নকশা অনুমোদনের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা নেন। সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে নারায়ণগঞ্জ ও যাত্রাবাড়ীতে তার ব্যক্তিগত আর্কিটেকচার ডিজাইন অফিসও রয়েছে।
অভিযোগকারীদের বক্তব্য
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুভাষচন্দ্র শীলের সিন্ডিকেট সদস্য বলেছেন যে, তারা কমিশনের মাধ্যমে পার্টি সংগ্রহ করে থাকেন। নারায়ণগঞ্জ ডিভিশনের বিভিন্ন সিএনজি পাম্প ও প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নাম পরিচয় গোপন রাখতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা তাকে "ধরে মাছ না ছুঁয়ে পানি" প্রকৃতির লোক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ঢাকা সড়ক ভবনে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রকৌশলী মন্তব্য করেছেন যে, "ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও রয়ে যায় ইসকনের সদস্য ভারতীয় র এর এজেন্ট সুভাষচন্দ্র শীল, আমরা তার কাছে জিম্মি।"
সুভাষচন্দ্র শীল ও কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া
এসব অভিযোগের বিষয়ে সুভাষচন্দ্র শীল বলেন, তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনো বক্তব্য দিতে পারবেন না। সড়ক ভবনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (প্রশাসন ও সংস্থাপন) জানিয়েছেন, তিনি এখনও অভিযোগের পত্র পাননি। পত্র পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্তের দাবি
অভিযোগকারী সাইমন রাজু এসব বিষয়ে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।পাঠক সুভাষচন্দ্র শীল এর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনুসন্ধান চলছে সন্দ্বীপের তার নিজ গ্রামে বাড়ি এবং ভারতেও বাড়ি রয়েছে তার।