শেষবেলায় বেপরোয়া বিমান পরিচালক
নিজস্ব প্রতিবেদক
৩০ আগস্ট, ২০২৫, 12:41 PM
নিজস্ব প্রতিবেদক
৩০ আগস্ট, ২০২৫, 12:41 PM
শেষবেলায় বেপরোয়া বিমান পরিচালক
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক মোহাম্মদ মমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগগুলো নতুন নয়। তবে অবসরে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে জানা গেছে। বিশেষ করে কেবিন ক্রুদের সোনা চোরাচালানের ঘটনায় আটক হলেও মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাদের দায়মুক্তির ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন তিনি। এই বিষয়গুলো বিমানের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা এবং সুনামকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি কেবিন ক্রু মর্জিনা আক্তার এলিন কাস্টমসের কাছে স্বর্ণসহ আটক হন এবং লিখিত স্বীকারোক্তিও দেন। এরপর নিয়ম অনুযায়ী কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এলিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিমানকে চিঠি পাঠায়। প্রথমে সাময়িক বরখাস্ত হলেও দীর্ঘ তদন্তের পর রহস্যজনকভাবে এলিনকে নির্দোষ ঘোষণা করে দায়মুক্তি দিয়েছে বিমানের প্রশাসন বিভাগ। কাস্টমসের কাছে যেখানে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছিল, সেখানে বিমানের এই তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার কামরুল হাসান জানিয়েছেন, তাঁরা বিষয়টি অবগত নন এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
একইভাবে, ১৩ মে রিয়াদ থেকে ফেরা কেবিন ক্রু হোসনে আরার কাছ থেকে তিনটি সোনার চুড়ি জব্দ করে কাস্টমস। সাময়িক গ্রাউন্ডেড করা হলেও তাঁকে ‘নির্দোষ’ ঘোষণার প্রক্রিয়া চলছে। সর্বশেষ ৪ আগস্ট কেবিন ক্রু রুদাবা সোনা ও আইফোনসহ আটক হন এবং তাকেও মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা যায়।
বিমানের একাধিক সূত্রের দাবি, এসব ঘটনায় অভিযুক্তদের দায়মুক্তি দেওয়ার মূল কারিগর হলেন পরিচালক মোহাম্মদ মমিনুল ইসলাম। অভিযোগ উঠেছে, প্রতিটি দায়মুক্তির জন্য তিনি ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন। তাঁর বিরুদ্ধে চলা এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে মমিনুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করতে মুঠোফোনে বার বার ফোন দেয়া হলেও মমিনুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি ।
উল্লেখ্য, মোহাম্মদ মমিনুল ইসলামকে ২০১৯ সালে দুদক তলব করেছিল এবং তাঁর বিরুদ্ধে ১১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাইলট নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। সেসময় তাঁর বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল আছেন, তা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আসন্ন অক্টোবরে তাঁর অবসরে যাওয়ার কথা, আর এর শেষ সময়েই তাঁর বিরুদ্ধে বিপুল অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে দায়মুক্তির ব্যবস্থা করার অভিযোগ উঠেছে, যা বিমানের সুনামকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ করছে।