ঢাকা ১৪ নভেম্বর, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
জুড়ীতে দলীয় বিভাজন সৃষ্টি‌ করছেন‌ যুবদল নেতা নিপার রেজা  তারেক রহমানের নির্দেশনা অমান্য করে সাজুর মোটরসাইকেল শোডাউনে হতাশ নেতাকর্মীরা দর্শনায় বিএনপির জনসংযোগ ফের বাড়ল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ রকিবুল হাসান রনি ও তার পরিবারের ভয়ঙ্কর প্রতারণার জাল এনবিআরের কর পরিদর্শক সাইদুর রহমানের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ: কোটি টাকার সম্পদের খোঁজে আইটিআইআইইউ তারেক রহমান প্রণীত ‘রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা’ বাস্তবায়নে সাইবার ফোর্সের মতবিনিময় সভা চাঁদপুরে সড়ক ও জনপথের ২১ কোটি টাকার সড়ক প্রকল্পে গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন : এস এ সিদ্দিক সাজু বিজিবি সদস্য মোঃ জসিম উদ্দিন বেপারীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর অভিযোগ

তানোরে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ন্যে সার সংকটে ইউএনও’র নিকট আলুচাষিদের অভিযোগ

#

৩০ নভেম্বর, ২০২১,  11:27 PM

news image

রাজশাহীর তানোরে বিসিআইসি’র সারডিলার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ন্যে এমওপি (পটাশ) সারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এনিয়ে আগাম জাতের আলু চাষিরা (কৃষক) ভোগান্তি ও বিড়ম্বনায় পড়েছেন। ফলে নিরুপাই হয়ে তানোর পৌর এলাকার জিওল-চাঁদপুর গ্রামের কৃষক ওমর হাজী, আব্দুল গণি ও আব্দুল গাফ্ফার ন্যায্যমূল্যে সার প্রাপ্তির দাবিতে  উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এর অনুলিপি উপজেলা কৃষি অফিসারকে দেয়া হয়েছে।কৃষক ওমর হাজী অভিযোগে জানান, তানোরের শিবনদের বুকে রহিমাডাংগা মৌজায় বন্যার পানি নেমে যাবার পর তাদের জমিতে আগাম জাতের আলু রোপন করে থাকেন। প্রতি মৌসুমের ন্যায় সম্প্রতি এবারো প্রায় ৫ শতাধিক কৃষক দেড় হাজার বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু রোপনের জন্য জমি চাষাবাদে নেমেছেন। কিন্তু বীজ ও জমি প্রস্তুত থাকলেও এমওপি (পটাশ) ও ডিএপি সার সংকটে আলু বীজের চারা রোপন করতে পারছেন না তারা। তবে, দুয়েকজন কৃষক বিভিন্ন কৌশলে বেশি দামে সার সংগ্রহ করে আলুর চারা রোপন করছেন। কিন্তু প্রায় কৃষক কোন অবস্থায় সার সংগ্রহ করতে পারেননি। ফলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন।কৃষক আব্দুল গাফ্ফার জানান, আলুর জমিতে যখন সার প্রয়োগের সময় তখন ডিলাররা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অধিক মুনাফার আশায় এমওপি ও ডিএপি সার মজুদ করে সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি দেখান। ফলে কৃষকদের মধ্যে সার নিয়ে হাহাকার শুরু হয়। এসুযোগে ৫০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তায় ডিএপি সারের দাম নেয়া হচ্ছে ৯০০ থেকে সাড়ে ৯০০ টাকা। আর এমওপি (পটাশ) সারের দাম নেয়া হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১১শ টাকা। সরকারি মূল্যের চেয়ে এভাবে বেশি দামে সার বিক্রি করে অধিক মুনাফা আদায় করছেন ডিলাররা। কিন্তু প্রান্তিক কৃষকরা ডিলারের চাহিদা মত টাকা না দিলে সার নেই বলে তাড়িয়ে দিচ্ছেন। এতে অনেকেই বাধ্য হয়ে অধিক মূল্যে এমওপি ও ডিএপি সার ক্রয় করছেন।কৃষকদের অভিযোগ, খোলাবাজারে ইউরিয়া টিএসপি সার পাওয়া গেলেও পটাশ ও ডিএপি সার  মিলছে না। ডিলারদের কাছে এসব সার কিনতে গেলে তারা সাপ্লাই নেই বলে ডিএপি’র বদলে টিএসপি সার নেয়ার জন্য কৃষকদেরকে বাধ্য করছেন। এছাড়াও সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে সার বিক্রি করা হচ্ছে। তবে, চলতি মৌসুমে কৃষি কর্মকর্তা ডিলারদের মধ্যে বরাদ্দ সার বিভাজনের পরিমান জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। এক্ষেত্রে সার মনিটরিং কমিটির কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ না থাকায় তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।এই সিন্ডিকেটের সাথে সরাসরি তানোর গোল্লাপাড়া বাজারের প্রাইম ট্রের্ডাস প্রোপাইটার প্রণব সাহা, কামারগাঁ বাজারের বিকাশ চন্দ্র, মোল্লা ট্রের্ডাসের প্রোপাইটার মোহাম্মাদ আলী বাবু ও সুমন ট্রের্ডাসের প্রোপাইটার সুমন শীল জড়িত থেকে তানোর পৌর এলাকা ছাড়াও কামারগাঁসহ পুরো উপজেলায় এমওপি ও ডিএপি সার সংকট সৃষ্টি করছেন। এছাড়াও ওই অসাধু ডিলাররা বাফা’র গুদামের বাইরে খোলা আকাশের নীচে দীর্ঘদিন থেকে পড়ে থাকা গুণাগুণ নষ্ট হওয়া সার কম দামে কিনে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করছেন।এব্যাপারে উপজেলা সারডিলার সমিতির সভাপতি মোহাম্মাদ আলী বাবু বলেন, সিন্ডিকেট নয় এমওপি (পটাশ) সার এখন সরবরাহ নেই। কিন্তু ডিএপির বদলে টিএসপি দিয়ে কৃষকদের চাহিদা মেটানো হচ্ছে। তবে বেশি মূল্যে নয়, সরকার নির্ধারিত মূল্যে সব ধরণের সার বিক্রি করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার শামিমুল ইসলাম বলেন, ডিলারদের মধ্যে সার বরাদ্দ বিভাজনের তথ্য তার জানা নেই। আর এমওপি (পটাশ) ও ডিএপি সার চাহিদামত সরবরাহ নেই। এজন্য সাময়িক সার সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আমরা দুয়েক দিনের মধ্যে চাহিদামত বরাদ্দ পেয়ে যাব। তবে, সংকট দেখিয়ে কৃষকের কাছে সারের বেশি দাম নেয়ার প্রমান পাওয়া গেলে ডিলারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।এব্যাপারে উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে কৃষকদের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

logo সম্পাদক- মোঃ সাজেদুর রহমান