ওবায়দুল কাদেরের সাথে সিরাজের ছবি ভাইরাল: জুড়ীতে ক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, 4:56 PM

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, 4:56 PM
ওবায়দুল কাদেরের সাথে সিরাজের ছবি ভাইরাল: জুড়ীতে ক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা
মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে সদর জায়ফরনগর ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে আওয়ামীলীগপন্থী সিরাজুল ইসলাম সদস্য হিসেবে স্থান পাওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলা বিএনপি'র আহ্বায়ক ডাঃ মোস্তাকিম হোসেন বাবুল, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক হাজী মাছুম রেজা ও যুগ্ম আহবায়ক মতিউর রহমান চুনু স্বাক্ষরিত ১১ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলার সদর জায়ফরনগর ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে সদস্য হিসেবে সিরাজুল ইসলামের নাম আসার পর উপজেলা জুড়ে বিএনপি'র নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিষয়টি গতকাল থেকে জুড়ী উপজেলায় টক অফ দা টাউনে পরিণত হয়েছে।
কমিটি ঘোষণার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাথে সিরাজুল ইসলামের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিএনপি নেতাকর্মীরা এই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে নিন্দার ঝড় তুলেছেন। যুবদল নেতা আসাদুজ্জামান খান মোবারক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, আমি যতটুকু জানি এবং দেখেছি উনি আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এখন সুযোগ বুঝে বিএনপিতে চলে আসতে চান কিন্তু তাদের মত দালালদের বিএনপিতে ঠাই নাই। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মৌলভীবাজার জেলা শাখার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ মিফতা লিখেছেন- এটা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে তারাতারি যেন এর ব্যবস্তা নেওয়া হয়। প্রাণের প্রিয় দলকে যদি কেউ নিজের ব্যক্তি সার্থের জন্যে ক্ষতিগ্রস্ত করে তাহলে এটা শুভ হবে না। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম এ বিষয়ে মন্তব্য করে লিখেছেন, ১৫ বছরে মন্ত্রী-এমপি নেতাদের সাথে ছবি উঠার সুযোগ কপালে হয় নাই ! হায়রে সরকারী দল।
জানা যায়, সিরাজুল ইসলাম উপজেলার সদর জায়ফরনগর ইউনিয়নের নয়াগ্রাম এলাকার প্রাচীন আওয়ামী লীগ পরিবারের একজন সদস্য। তারা জন্মসূত্রে বংশ পরম্পরায় আওয়ামী লীগ করে আসছেন। তার চাচাতো ভাই আব্দুল লতিফ উপজেলা আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় সদস্য। তার ভাতিজা আব্দুস সাত্তার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার আরেক ভাতিজা মনিরুল ইসলাম ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য (শিক্ষার্থীদের উপর হামলার মামলায় পলাতক আসামি)। এছাড়াও সিরাজুল ইসলাম আওয়ামী সমর্থক হওয়ায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জুয়েল রানার প্রতিষ্ঠান জুড়ী আধুনিক প্রাইভেট হসপিটালের বিজনেস পার্টনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া বিগত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের শাসনামলে সিরাজের প্রতিষ্ঠান জুড়ী আধুনিক হাসপাতালে থেকে নিয়ন্ত্রিত হতো আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম। সকাল থেকে রাত অব্দি এখানে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের ভীর লেগেই থাকতো। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সিন্ডিকেট সকল ব্যবসার সাথে সিরাজুল ইসলাম জড়িত রয়েছেন।
বিএনপি'র ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের মত এত গুরুত্বপূর্ণ একটি কমিটিতে দলের এত ত্যাগী নেতা থাকা সত্ত্বেও আওয়ামীপন্থী সিরাজুল ইসলামকে কেন স্থান দেয়া হলো। এটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে তাকে আনা হয়েছে। দলের মধ্যে এখনো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ধূসররা রয়েছে। আওয়ামী লীগের সেইসব ধুসররা তাদের ফায়দা হাসিলের জন্য এমন নেককারজন কাজ করছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা আশা করছি অবিলম্বে সিরাজুল ইসলামকে কমিটি থেকে বহিষ্কার করে দলের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনবেন।
এ বিষয়ে জানতে সিরাজুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত নই। ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে আমার ওঠাবসা আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জুড়ী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ডাঃ মোস্তাকিম হোসেন বাবুল বলেন, আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে সিরাজুল ইসলামের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।