ঢাকা ১৩ নভেম্বর, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
জুড়ীতে দলীয় বিভাজন সৃষ্টি‌ করছেন‌ যুবদল নেতা নিপার রেজা  তারেক রহমানের নির্দেশনা অমান্য করে সাজুর মোটরসাইকেল শোডাউনে হতাশ নেতাকর্মীরা দর্শনায় বিএনপির জনসংযোগ ফের বাড়ল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ রকিবুল হাসান রনি ও তার পরিবারের ভয়ঙ্কর প্রতারণার জাল এনবিআরের কর পরিদর্শক সাইদুর রহমানের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ: কোটি টাকার সম্পদের খোঁজে আইটিআইআইইউ তারেক রহমান প্রণীত ‘রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা’ বাস্তবায়নে সাইবার ফোর্সের মতবিনিময় সভা চাঁদপুরে সড়ক ও জনপথের ২১ কোটি টাকার সড়ক প্রকল্পে গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন : এস এ সিদ্দিক সাজু বিজিবি সদস্য মোঃ জসিম উদ্দিন বেপারীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর অভিযোগ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে রাজপথে নামেন আওয়ামী ছাত্রলীগের নেতারা

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ নভেম্বর, ২০২৪,  5:37 PM

news image

লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ছাত্রদের ওপর ৮০/ ৯০ দশকের মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।

জুলাই আগস্ট মাসে যখন অসহযোগ আন্দোলন চলছিলো তখন মোহাম্মদপুর এলাকায় ছাত্রদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে। নিজেদের লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে রাজপথে নামেন মোহাম্মদপুর এলাকার ৮০-৯০ দশকের ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা। এরা হচ্ছে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, মাসুদ রানা শাহীন, মজিবর। এদের সাথে ছিল কিরণ সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি আইনুল ও ইয়াসিন বক্স সহ একাধিক লাইসেন্সধারী সন্ত্রাসীরা, এরা সবাই ৩২ নং ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজানের সহকারী।  

গত ১১ মেয়ে ২০২০ সালে টিসিবির তেল কালোবাজারে বিক্রির মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিল আইনুল। মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আইনুল ইসলামের রিমান্ড ও জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন আদালত। আওয়ামীলীগের সময় ভিন্ন অপরাধের সাথে পরোক্ষভাবে এরা জড়িত থাকলেও বর্তমান সময় আলোচনায় নাই এরা।

মাসুদ রানা শাহীন সহ এদের সবাইর লাইসেন্স করা অস্ত্র শটগান ও পিস্তল রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে এরা বিএনপির সাথে সম্পৃক্ততা গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। এরা বর্তমানে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে বর্তমান সময় তেমন কোনো মামলাও হচ্ছে না। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় এরা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাদের সাথে এদের সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছে।

সূত্রে জানা যায় গত ১৯ জুলাই সকালে মোহাম্মদপুর সলিমুল্লাহ রোডের মাথায় ছাত্রদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে মোহাম্মদপুর থানার ছাত্রলীগের সাবেক দুই সভাপতি এরা হচ্ছে মাসুদ রানা শাহীন ও মজিবর, এদের সাথে প্রায় শতাধিক লোক ছিলো তাদের সাথে। কিন্তু আলোচনায় নেই এঁরা। উল্লেখযোগ্য ইয়াছিন ও কিরণ এরা সবাই বাবর রোডের স্থানীয়। ঐদিন এরা নিজেদের লাইসেন্স করা কিছু অস্ত্র ও অবৈধ কিছু অস্ত্র নিয়ে ছাত্রদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সূত্রে আরো জানা যায় এরা সবাই ৩২ নং ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান (ওরফে পাগলা মিজানের) সহযোগী। 

ছাত্র আন্দোলন মিজান এদের সব রকম সহযোগিতা ও অর্থ দিয়েও সহযোগিতা করে এসেছিলেন। ১৯ জুলাই সকালে ছাত্রদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হলে শাহীনের পিস্তল হারিয়ে যায়। এরপর শাহীনের শর্টগান দিয়ে কিছুক্ষণ ফাইট করে এর পর একটি গুলি ফেসে যায় শাহীনের শর্টগানের, এবার মজিবর, ইয়াছিন, কিরণ সহ ৫০ জন মিলে তাদের শর্টগান দিয়ে গুলি করতে করতে শাহিনকে উদ্ধার করে। যদি এরা শাহিনকে ঐসময় উদ্ধার না করতো তাহলে ছাত্রজনতার হাতে শাহিন  নিহত হতো বলে জানান বিশ্বস্ত সূত্র। এদের সবাইর যেহেতু লাইসেন্স করা অস্ত্র তাই এরা নির্দ্বিধায় ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়।আওয়ামীলিগের শাসনামলে এই ১৫ থেকে ২০ বছরে শাহীন ও মজিবর এর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন থানায়।

উল্লেখ্য আগারগাঁও এলাকায় হাজি শফি ও কাঞ্চন সহ দু'জন সহ মোট ৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় ২০০২ সালে। তখনকার সময় তেজগাঁও থানায় মামলা হয় মজিবর ও শাহীনের বিরুদ্ধে। সেই মামলায় আসামি হলেও তাদের কোনো শাস্তি ই হয়নি এখন পর্যন্ত। 

স্থানীয়দের কাছে এদের বিষয় জানতে চাইলে তারা বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে তারা একাধিক অপরাধের সাথে জড়িত থাকলে তাঁদের কিছুই হয়নি।

তাঁদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতেও সাহস পায়নি।

অন্য একটি সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে হুমায়ুন রোডে পলাশ হত্যার এক নাম্বার আসামি ছিল মজিবর ও শাহিন সহ কয়েকজন। খোঁজ নিয়ে জানা যায় মজিবরের গুলিতে পলাশ নিহত হয়ে ছিলো। যার বিচার এখনো হয়নি। এদিকে আরো একটি তথ্য আসে এই প্রতিনিধির  কাছে। গত ২০০৫ সালে শহিনের স্ত্রী সাবেক প্রেমিক গাবতলি আমিন বাজার এলাকায় হত্যা হয়, সেই হত্যা মামলায় প্রধান আসামি ছিলো শাহিন। সেই হত্যারও এখনো কোনো বিচার হয়নি বলেও জানা যায়। এসব বিষয় রাষ্ট্রের অধিক তদন্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করেন সাধারণ নাগরিকরা। এরা সবসময় আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে।

মোহাম্মদপুর এলাকার ইয়াসিন বক্স এবং কিরণ এরা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে আওয়ামী লীগ। বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে বিএনপি। এদের বিরুদ্ধে রয়েছে চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার অভিযোগ। ইয়াসিন বক্স ও কিরণের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় রয়েছে একাধিক মামলা জেলও খেঠেছে এরা মাদক বিক্রির দায়ে।

আন্দোলন প্রতিহত, মানুষ হত্যা ও ছাত্রজনতাকে প্রতিহত করতে জাহাঙ্গীর কবির নানকের বর্ধিত সভা। গত ২৫ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সুচনা কমিউনিটি সেন্টার একটি বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়। বর্ধিত সভাটি আয়োজন করে নানক। সেই বর্ধিত সভায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা ফাইট করে তাদের পুরুষ্কৃত করা হয়। পুরুষ্কার হিসেবে নতুন অস্থায়ী কমিটি করে দেন জাহাঙ্গীর কবির নানক।

এ সময় আদাবর থানার দায়িত্ব দেওয়া হয় আরিফুর রহমান তুহিনকে, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয় মাসুদ রানা শাহীনকে, যে কিনা গুলি করতে করতে তার পিস্তল হারিয়ে ফেলে,এরপর শটগান দিয়ে গুলি করতে করতে শটগানের গুলিও ফেঁসে যায় পরবর্তীতে কোনো রকম প্রাণে বেঁচে যায় শাহিন। ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয় মজিবর কে, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয় কাউন্সিলর ফোরকানকে, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয় তোফায়েল সিদ্দিক তুহিনকে, ৩৪ নং ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয় কাউন্সিলর খোকনকে। এরা সবাই এখন পলাতক রয়েছে। পলাতক থাকলেও এদের বিএনপির নেতাদের সাথে রয়েছে নিয়মিত যোগাযোগ। নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য যেকোনো মুহূর্তে এরা বিএনপিতে ঢুকে পড়তে পারে বলে জানান স্থানীয়রা

logo সম্পাদক- মোঃ সাজেদুর রহমান