মাঠজুড়ে সোনালী স্বপ্নের ছড়াছড়ি
১০ নভেম্বর, ২০২১, 12:11 AM

১০ নভেম্বর, ২০২১, 12:11 AM

মাঠজুড়ে সোনালী স্বপ্নের ছড়াছড়ি
চলতি বছর বর্ষার আগেই বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। আগাম বৃষ্টি পেয়ে আমন চাষে মাঠে নেমে পড়েছিলেন কৃষকরা। তাই এবার একটু আগাম ধান উঠবে কৃষকের ঘরে। বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠে এখন সবুজপাতার ফাঁকে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন বাতাসে দুলছে।
সোনালী ধানে ধানে ভরে উঠেছে মাঠ। সেই সঙ্গে রঙিন হয়ে উঠছে প্রান্তিক কৃষকের স্বপ্ন। মাঠজুড়ে এখন সোনালী স্বপ্নের ছড়াছড়ি। বরেন্দ্রের মাঠগুলোয় যতদূর চোখ যায় চারদিকে সোনালী ফসলের সমারোহ।
চলতি কার্তিক মাসের মাঝামাঝি থেকে বরেন্দ্র অঞ্চলে অল্প পরিসরে সোনার ধান কাটা শুরু করছেন কৃষকরা। অগ্রহায়ণ মাস পড়লেই পুরোদমে আমন কাটা-মাড়াই শুরু করবেন বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকেরা।
এর আগে আমনের মাঝিামাঝি সময়ে নানা রোগবালায় ও ইঁদুরের অত্যাচার এবং শেষে এসে নিম্নচাপের প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমন ক্ষেতের সামান্য ক্ষতি হলেও কৃষি অধিদফতর ও কৃষকদের চেষ্টায় সব ক্ষতি কাটিয়ে উঠেছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকেরা। এখন ফলন ভাল হবে এমন স্বপ্ন নিয়ে নতুন করে আশাই বুক বেঁধেছেন এ অঞ্চলের চাষিরা।
বরেন্দ্রের কৃষকরা জানান, পুরো মাঠ এখন সোনালী রঙে সেজেছে। মাঠে গেলে বাতাসের দোলে সোনালী ধানের সুগন্ধীতে মনপ্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে। অন্য যে কোন বছরের চেয়ে চলতি বছর ধানের মাথা ভাল আছে। তাই বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে আমনের ভাল দামও আছে।
রাজশাহী জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরে তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭০ হাজার ২২৪ হেক্টর জমিতে। চাষাবাদ হয়েছে ৭৩ হাজার ৫২৩ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে পোকা দমনের পদ্ধতিতে পার্চিং-লগ, লাইন এবং ধোঁনচা গাছ লাগানো হয়েছে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে।
এছাড়াও রাজশাহী অঞ্চলের রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় আমন চাষাবাদ হয়েছে আরও ৩ লাখ ৫০ হাজার হেক্টরের উপরে।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পাকড়ি গ্রামের কৃষক লতিফুর জানান, চলতি মৌসুমে ৯ বিঘা জমিতে সুমন স্বর্ণা জাতের ধান চাষাবাদ করেছেন। বর্তমানে তার ক্ষেতের ধান পাক ধরেছে। ধান কাটা শুরু হয়েছে।
তানোর উপজেলার পাঁচন্দর গ্রামের কৃষক জামিনুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে ১৮ বিঘাতে আমন চাষাবাদ করেছেন। আমনের মাঝামাঝি সময়ে পোকা ও ইঁদুরের অত্যাচার ছিল ও শেষ সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগে তার আমন ক্ষেতের সামান্য ক্ষতি হয়েছে। তবুও সমস্যা নেই,কারণ অন্যসব বছরের চেয়ে এবার আমন ধানের শীষ ভাল আছে ফলে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সামিউল ইসলাম জানান, এবার আগাম বৃষ্টি পেয়ে কৃষকরা আগাম আমন রোপন করেছিলেন। এর জন্য কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করে কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদফতর। চলতি মৌসুমে কৃষকেরা স্বর্ণা, একান্ন, ব্রি ধান-৮৭ ও বিনা ধান ১৭ জাতের আবাদ বেশি করেছেন। এসব ধান পানি সাশ্রয়ী ও উচ্চ ফলনশীল।
এখন মাঠে মাঠে ধানের পাক ধরেছে। কিছু কিছু কৃষক অল্প পরিসরে ধান কাটা শুরুও করেছেন। অন্য যে কোন বছরের চেয়ে এবার ফলন বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।