ঢাকা ১৫ মার্চ, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
গাবতলী'র বস্তিতে আগুনে পুড়ে যাওয়া হতদরিদ্রদের মাঝে ইফতার মাহফিল ট্যাক্স ল'ইয়ার্স সোসাইটি ২০১৭ এর নির্বাচিত নতুন কমিটির অভিষেক দোয়া ও ইফতার অনুষ্ঠিত জুড়ীতে আমার দেশ পত্রিকার নাম ভাঙ্গিয়ে এক প্রতারকের চাঁদাবাজির অভিযোগ ‘বাবা নেই’ ভিডিও গানের মোড়ক উন্মোচন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা জালাল আহমেদ বহাল তবিয়তে `ট্যাক্স ল'ইয়ার্স সোসাইটি ২০১৭' এর নির্বাচিত নতুন কমিটি ঘোষণা আগামী পাঁচ বছরে শীর্ষে থাকবে ইমপিরিয়াল লক্ষ্য প্রতিষ্ঠাতার মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ দেশ জনতা পার্টির আলোচনা সভা ম্যাচের আগে আইসিসির ক্যামেরার সামনে যা বললেন মিরাজ যুব উন্নয়নে রাজ্জাক-আনিসুলের শক্তিশালী সিন্ডিকেট

রহস্যময় ষড়যন্ত্রের বেড়াজালে শ্রমিকলীগ সভাপতি সেলিম আটক তৃণমুলে ক্ষোভ

#

২১ আগস্ট, ২০২২,  6:00 PM

news image

জাতীয়  শ্রমিকলীগ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্র লীগের সাবেক সদস্য সেলিম আহমেদকে যুবদল নেতার একটি পুরনো চাঁদাবাজী মামলায় ইস্যু করে সন্দেহ ভাজন আসামি করে গত ১৬ আগস্ট গ্রেফতার করে পুলিশ। অথচ এই মামলায় বাদি নিজেও শ্রমিকলীগ সভাপতি সেলিমের বিরদ্ধে কোন অভিযোগ করেননি। মামলায় ৭জন আসামির নাম উল্লেখকরে তাহিরপুর থানায় একটি মামলা হয়েছিলো অনেক আগেই।

গত ১৫ আগস্ট তাহিরপুরে সেলিমের নেতৃত্বে বিশাল শোকসভা আয়োজনের পর ১৬ আগস্ট তাকে যুবদল নেতার দায়ের করা ঐমামলায় আসামি না হলেও রহস্যময় ভাবে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেলিম আহমেদকে আটকের পরথেকেই জেলার রাজনৈতিক অঙ্গন সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম থেকে শুরুকরে তৃণমূল মানুষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এই নেতার আটক মেনে নিতে পারছেননা তৃণমূল মানুষেরা। কিভাবে একজন যুবদল নেতার মামলায় জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি জেল হাজতে সেই রহস্যময় ভাবনা থেকেই যায়?  তৃণমূল নেতা-কর্মীদের অনেকেই তারা বলছেন, সেলিম আহমেদ আপাদকমস্তক একজন  রাজনীতিবিদ ও মানবিক ব্যক্তিত্ব ও দানবীর সমাজ সেবক হিসেবে পরিচিত। তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন এমনটি প্রকাশ পায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে।

অনুসঁন্ধানে সম্প্রতি ১৫ আগস্ট তাহিরপুর উপজেলায় শোকসভা আয়োজন নিয়ে বিরোধ চলছিলো স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের ২পক্ষের মধ্যে। একপক্ষে ছিলেন দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে কমিটির ৪৭ সদস্য কর্তৃক সাংগঠনিকভাবে বহিস্কৃত দুই নেতা। তাদের সঙ্গে সভায় নেতৃত্ব দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। আর অন্য পক্ষে সেলিম ছিলেন তাহিরপুর আওয়ামী লীগের অধিকাংশ সদস্যদের পক্ষে। যারা দলকে সংগঠিত করতে  দুই নেতাকে বহিস্কার করেছিলেন।

১৫ আগস্ট তাহিরপুরের বাজার নিকটবর্তী এলাকায় সভার আয়োজন করে দুই পক্ষই। এসময় সেলিমের নেতৃত্বাধীন সভায় কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতি ছিলো। অন্যদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য উপস্থিতি থাকার পরেও  সভায় লোকজন কম থাকায় এবং সেলিমের সভায় লোকজন বেশি থাকার অভিযোগের ভিত্তিতে আলোচনায় আসেন সেলিম এমনটি প্রকাশ পেয়েছে সামাজিক ফেইসবুকে স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

এমপির চেয়ে জনপ্রিয়তা বেশি হয়ে যাওয়ায় সেলিমকে পরদিনই আটক করা হয় বলে অভিযোগ তাহিরপুরের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতা ও স্থানীয় মানুষদের।

এসব ছাড়াও শ্রমিক লীগ সভাপতি সেলিম জেলার অন্যতম ব্যবসায়ী হওয়ায় তাকে নানাভাবে ব্যবসায় অংশিদারিত্ব চেয়ে হয়রানি করে আসছিলো একটি প্রভাবশালী চক্র। সরকারকে ৩২ কোটির ও বেশি টাকা রাজস্ব দিয়ে বৈধভাবেই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন সেলিম তিনি প্রতিবছর সরকারকে কোটি টাকা আয়কর দিয়ে থাকেন। তাকে বিপদে ফেলতে দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা চালিয়ে আসছিলো একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র। আওয়ামী লীগের জেলার শীর্ষ পদে থাকা এক নেতাও তারসঙ্গে কাজ না করায় ক্ষুব্ধ ছিলেন সেলিমের ব্যপারে। সব মিলিয়ে চক্রান্ত বা বিরোধ চলে আসছিলো লোকচক্ষুর আড়ালেই। পাশাপাশি বখত্ পরিবারের জামাতা হিসেবেও এই পরিবারকে হেও প্রতিপন্ন করার অংশ হিসেবে সেলিমের দিকে নজর ছিলো রাজনৈতিক কুটকৌশলকারীদের। বিপরিতে ন¤্র স্বভাবের ক্লীন ইমেজের রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত সেলিম বুঝতে পারেননি তার জন্য অপেক্ষা করেছিল এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনা। যা মামলার বাদি যুবদল নেতা অলি নিজেও জানেনা।

১৫ আগস্ট জাতীয় শোকসভা সফল হওয়ায় ১৬ আগষ্ট সকাল ৮টা সেলিমের জন্য ছিলো রহস্যময় ষড়যন্ত্রের ভেড়াজাল। সকাল ৮টার আগে থেকেই সেলিমের হাসন নগরস্থ ময়নার পয়েন্ট এলাকার বাসার সামনে অবস্থান নেয় গোয়েন্দারা। অনেকটা ফিল্মি কায়দা  পরিচালনা করে পুলিশ সদস্যরা।

মামলায় তার নাম উল্লেখ না থাকলেও তাকে থানায় যেতে আহ্বান করে পুলিশ। সেলিম নিজের গাড়িতে করেই থানায় রওনা করেন। পরিবারের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই পুলিশের বিভিন্ন উন্নয়ণ কর্মকান্ডে সহযোগিতা করতেন সেলিম, সে ধারণা থেকেই হয়তো নতুন কোন কারনে সহযোগিতার প্রয়োজন ভেবে সেলিম থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে তাকে আটক দেখায় পুলিশের ডিবি সদস্যরা। 

কারো মামলায় উল্লেখিত অপরাধী না হলেও তাকে আটকের খবর জানাজানি হলে পুরো শহরে নিন্দার ঝড় বইতে থাকে। পরে তাকে যুবদল নেতার করা পুরনো ১০লাখ টাকা চাঁদাবাজীর মামলায় সন্দেহভাজন আসামি দেখিয়ে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। যে ব্যক্তি এবারের বন্যায় কোটি টাকা অসহায় মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছে সে কি করে ১০লাখ টাকা চাদাঁবাজী করবে? সঙ্গে সঙ্গেই তাকে কোর্টে চালানও করে দেওয়া হয়। ঐদিনই ১০ দিনের রিমান্ডও আবেদন করে পুলিশ। এসময় আদালতের আইনজীবীদের সবাই সেলিমের পক্ষে ন্যয় বিচার চাইলে আদালত পরদিন এই শুনানির দিন নির্ধারণ করেন। এবং পরদিন শুনানির সময় বাদি পক্ষে কোন আইনজীবি দাড়াননি? সকল আইনজীবিরা একযোগে সেলিমের পক্ষে ন্যয় বিচার চান আদালতে। পুলিশ এসময় তার বিরদ্ধে আনা অভিযোগের কোন প্রমাণ না দেখাতে পারায় “ সোর্সের বরাতে তাকে আনা হয়েছে” বলে উল্লেখ করে। এসময় আদালত পুলিশের চাওয়া রিমান্ড আবেদন গ্রহণ করেননি, তবে সেলিমকে জেল গেইটে ঘটনার ব্যপারে ২দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতে পারে বলে আদেশ দেন।

এ অবস্থায় সেলিমকে রাজনৈতিকভাবে বিপদে ফেলার জন্য অপকৌশলের মাধ্যমে হেনস্তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন তাহিরপুরের রাজনৈতিক নেতাকর্মী থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারাও।

তাহিরপুরের ছাত্রলীগ একনেতা বলেন এলাকার আওয়ামী লীগের মাঝে অনেকদিন ধরেই নানা কোন্দল ছিলো, সেলিম ভাই এই সমস্যা দুর করে সম্প্রতি তাদেরকে নিয়ে দলকে কর্মচঞ্চল করে তোলেছিলেন। এতেই ক্ষুব্ধ হয়েছে একটা পক্ষ, তাকে এখান থেকে সরাতেই চক্রান্ত চলছিলো, ১৫ আগষ্টের শোকসভাতে উনার সভায় বেশি মানুষ হওয়ায় অন্য পক্ষ ক্ষুব্ধ হয়, এইটাতে এমপিও ছিলেন, এখন সেলিম ভাইর এই অবস্থার জন্য বুঝাই যাচ্ছে যে এটা পরিকল্পিত ঘটনা।

সুনামগঞ্জ জেলার সচেতন মহল বলছেন, সুনামগঞ্জের রাজনীতি দিন দিন যে কত খারাপ হচ্ছে আফসোস ভালো মানুষরা রাজনীতি ছেড়ে দিবে। তবে তাহিরপুরে স্মরণকালের শোক সমাবেশ করে অনেকের ‘বদ নজরে’ পড়েছে সেলিম।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা শহরের একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, ক্ষমতাশীন দলের একজন জনপ্রিয় নেতাকে এভাবে শোকের মাসে ‘হাওয়াই মামলায়’ জড়ানোয় আওয়ামী লীগের জন্য ঠিক হয়নি।


এছাড়াও যে ৩২ কোটি টাকা দিয়ে সরকারের কাছ থেকে যাদুকাটা ইজারার নিয়েছেন, সে কিভাবে ১০লাখ টাকার চাঁদাবাজি ও অপহরণ মামলার আসামি হন? বরং যারা যাদুকাটায় বিনা পয়সার ভাগিদার না করায় ক্ষুব্ধ তাদের ষড়যন্ত্রে আজ তাকে কারাগারে যেতে হয়েছে। একজন যুব দল নেতার দায়ের করা মামলায় জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি সেলিম আহমেদকে ষড়যন্ত্র করে জড়ানো হয়েছে বলে ধারণা তৃণমূল মানুষের। তাদের দাবী আদালত সেলিমকে খুব তাড়াতাড়ি মুক্তি দিবেন এমটি প্রত্যাশা তৃণমুল মানুষের।

logo প্রকাশক - মোঃ মাহফুজুর রহমান সম্পাদক- মোঃ সাজেদুর রহমান নির্বাহী সম্পাদক- আব্দুস সালাম মিতুল